সফল মুমিনদের কতীপয় গুণাবলী
সরল অনুবাদঃ
১. নিশ্চিতভাবে মুমিনরা সফলকাম হয়েছে।
২. যারা নিজেদের নামাজে বিনয় ও নম্র।
৩. যারা বাজে বা বেহুদা কথা কাজ থেকে দুরে থাকে।
৪. যারা তাজকিয়া বা পরিশুদ্ধির ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়।
৫. এবং যারা নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।
৬. তবে তাদের স্ত্রীদের ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।
৭. তবে যদি কেউ তাদের ছাড়া অন্য কাউকে (যৌন ক্ষুধা মেটাবার জন্য) কামনা করে তবে তারা হবে সীমালংঘনকারী।
৮. এবং যারা তাদের আমানতসমূহ এবং ওয়াদা চুক্তির (অঙ্গীকার) রক্ষনাবেক্ষন করে।
৯. এবং যারা তাদের নামাযসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষন করে।
১০. তারাই (এসব গুনের অধিকারী) উত্তরাধিকার লাভ করবে।
১১. তারা উত্তরাদিকার হিসাবে ফিরদাউস পাবে এবং সেখানে চিরদিন থাকবে।
সুরা পরিচিতিঃ
সুরা নং- ২৩
মোট আয়াত- ১১৮
মোট রুকু- ৬
নাযিল- মক্কায়
পূর্ববর্তী সুরা- হাজ্জ্ব
পরবর্তী সুরা- নুর
নামকরনঃ
সুরার নামকরন দুই ভাবে হয়ে থাকে-
সুরার মধ্যে থাকা বহুল আলোচিত শব্দ (শব্দ ভিত্তিক)
যেমন- নাস, ফালাক
বিষয়ভিত্তিকঃ যেমন- ফাতেহা, ইখলাস
এ সুরাটি ১ম আয়াতের قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ থেকে নামকরন করা হয়েছে ‘‘সুরা মুমিনুন’’। যার অর্থ মুমিনগণ, বিশ্বাসীগণ, ঈমান আনায়নকারীগণ, The Believers.
মুমিনুনের এক বচন মুমিন এই নামে কুরআনের ৪০ নং সুরা মুমিন অবতীর্ণ হয়েছে।
মুমিনুনের বিপরীথ শব্দ কাফিরূন এই নামে কুরআনের ১০৯ নং সুরা কাফিরূন অবতীর্ণ হয়েছে।
নাযিল হবার সময়কালঃ
সুরাটি মক্কী, হিজরতের পূর্বে নাজিল হয়েছে। তবে ঠিক কোন সময়ে নাজিল হয়েছে তা সঠিক ভাবে বলা যায় না। বর্ণনাভঙ্গি ও বিষয়বস্তু হতে প্রতিয়মান হয় যে, এ সুরা রাসুল করীম (সঃ) এর মক্কী জীবনের মাঝামাঝি সময়ে নাজিল হয়েছিল।
এই সুরা নাযিল হওয়ার আগেই হযরত ওমর রা: ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন এই সুরাটি তার সামনেই নাযিল হয়। অহি নাযিলের সময় রাসুলের অবস্থা কেমন হয় তা তিনি স্বচক্ষে দেখেছিলেন (সুরা মুজ্জাম্মিলের ৫নং আয়াত)।
সুরা মুমিনুনের ফজিলতঃ
হযরত উমর (রাঃ) বলেন রসুল (সঃ) এর প্রতি যখন অহি নাজিল হত তখন মৌমাছির গুঞ্জনের ন্যায় আওয়াজ শুনা যেত। একদিন তাঁর কাছে এমনি আওয়াজ শুনে আমরা অহি শুনার জন্য থেমে গেলাম। অহির বিশেষ এ অবস্থার শেষ হলে নবী করীম (সঃ) কেবলামুখী হয়ে বসে পড়লেন এবং দোয়া, করতে লাগলেন,
اَللّهُمَّ زِدْنَا وَلَا تَنْقُصْنَا وَأَكْرِمْنَا وَلَا تُهِنَّا وَأَعْطِنَا وَلَا تَحْرِمْنَا وَآثِرْنَا وَلَا
تُؤْثِرْ عَلَيْنَا وَاَرْضِنَا وَارْضَ عَنَّا
“হে আল্লাহ! আমাদেরকে বেশী দাও কম দিওনা। আমাদের সম্মান বৃদ্ধি কর- লাঞ্ছিত করো না। আমাদেরকে দান কর-বঞ্চিত করো না। আমাদেরকে অন্যের উপর অধিকার দাও অন্যদেরকে আমাদের উপর অগ্রাধিকার দিয়ো না, আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাক এবং আমাদেরকে তোমার সন্তুষ্ট কর।”(তিরমিজি)
এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ এক্ষণে দশটি আয়াত নাযিল হয়েছে। কেউ যদি এ আয়াতগুলো পুরোপুরি পালন করে, তবে সে সোজা জান্নাতে যাবে। এরপর তিনি সুরা মুমিনুনের প্রথম দশটি আয়াত পাঠ করে শোনালেন। (আহমাদ)
ইমাাম নাসায়ী তফসীর অধ্যায়ে ইয়াযিদ ইবনে কাবনুস বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আয়েশা (রাঃ) কে প্রশ্ন করা হয় যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর চরিত্র কিরূপ ছিল? তিনি বললেন তার চরিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে অতঃপর তিনি এই দশটি আয়াত তেলাওয়াত করে বললেনঃ এগুলোই ছিল রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর চরিত্র ও অভ্যাস। (ইবনে কাসীর)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাঃ
এখানে قد افلح মানে সফলকাম হয়ে গেছে।
ইংরেজি করলে করলে যার অর্থ হবে He had been Succeed.
-ভবিষ্যতের সফলতার নিশ্চয়তা বুঝাতে Past Perfect Continuous tense ব্যবহার করা হয়েছে।
আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহ তায়লা সেসব মুমিনকে সাফল্য দান করার ওয়াদা করেছেন। যারা আয়াতে উল্লিখিত ৭ টি গুনে গুনান্বিত। পরকালের পূর্ণাঙ্গ সাফল্য এবং দুনিয়ার সম্ভাব্য সাফল্য সবই এই ওয়াদার অন্তর্ভুক্ত।
এই আয়াতসমূহ ছাড়াও কুরআনে সফল মুমিনদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন:
সুরা আনফলের ২-৩ আয়াতে বলা হয়েছে ৫ টি গুণের কথা:
১. আল্লাহর স্মরণে অন্তর কেঁপে উঠে।
২. আল্লাহর আয়াত শুনলে ঈমান বাড়তে থাকে।
৩. আল্লাহর প্রতি একমাত্র ভরসা করে।
৪. সালাত কায়েম করে।
৫. রিযিক থেকে দান করে।
সুরা তাওবার ৭১ নং আয়াতে বলা হয়েছে ৪ টি গুণের কথা:
১. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা।
২. সালাত কায়েম করা।
৩. যাকাত আদায় করা।
৪. আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করা।
সুরা আহযাবের ৩৫ নং আয়াতে ১০ টি গুণের কথা বলা হয়েছে:
১. আত্মসমর্পনকারী
২. বিশ্বাসী
৩. অনুগত
৪. সত্যবাদী
৫. ধৈর্য্যশীল
৬. বিনয়ী
৭. দানশীল
৮. রোজাদার
৯. লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী
১০. আল্লাহর জিকিরকারী।
উল্লেখিত আয়াতগুলোতে মুমিনদের সাতটি গুণ:
সর্বপ্রথম গুন হলো ঈমানদার হওয়া। কিন্তু এটা একটা বুনিয়াদী ও মৌলিক বিষয় বিধায় এটাকে এই সাতটি গুনের মধ্যে শামিল না করে পর পর সাতটি গুন বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রথম গুনঃ
‘‘যারা তাদের নামাযে বিনয়ী ও নম্র’’
নামাযে খুশু বলতে বিনয় ও নম্র হওয়া বুঝায়। খশুর আভিধানিক অর্থ স্থিরতা। শরীয়তের পরিভাষায় এর মানে অন্তরে স্থিরতা থাকা। অর্থ্যাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর কল্পনা অন্তরে ইচ্ছাকৃত ভাবে না করা এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্থির রাখা।
দিলের খুশু হয় তখন যখন কারো ভয়ে বা দাপটে দিল ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। আর দেহের খুশু এভাবে প্রকাশ পায় যে, কারো সামনে গেলে তার মাথা নিচু হয়ে যায়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে পড়ে চোখের দৃষ্টি নত হয়ে আসে, গলার স্বর ক্ষীণ হয়ে যায়।
হাদীসে হযরত আবু যার (রা:) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা:) বলেন- নামাযের সময় আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি সর্বক্ষণ দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখেন যতক্ষণ না নামাযী অন্যদিকে ভ্রুক্ষেপ করে। যখন সে অন্যকোন দিকে ভ্রুক্ষেপ করে তখন আল্লাহ তায়ালা তার দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন। (নাসায়ী) (আবু দাউদ)
যেসব কাজ নামাযে খুশু সৃষ্টিতে বাধা দেয়ঃ
১. নামাযের মধ্যে নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে খেলা করা বা নাড়াচাড়া করা।
হাদীস- একবার নবী (সা:) এক ব্যক্তিকে নামাযের মধ্যে মুখের দাড়ী নিয়ে খেলা করতে দেখে বললেন-
لَوْ خَشَعَ قَلْبُ هذَا خَشَعَتْ جَوَارِحُه
“যদি এ লোকটির দিলে খুশু থাকত তাহলে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপরও খুশু থাকত। (বায়হাকী)
২. নামাযে এদিক ওদিক তাকালে নামাযে একগ্রতা বা খুশু নষ্ট হয়ে যায়। এ সম্পর্কে নবী (সা:) বলেন- এটা নামাযীর (মনোযোগের) উপর শয়তানের থাবা।
৩. নামাযে ছাদ বা আকাশের দিকে তাকালে নামাযের খুশু নষ্ট হয়ে যায়। নবী করিম (সা:) বলেন-
‘লোকেরা যেন নামাযে তাদের চোখকে আকাশমুখী না করে। (কেননা তাদের চোখ) তাদের দিকে ফিরে নাও আসতে পারে।’(বুখারী)
৪. নামাযে হেলা-ফেলা করা ও নানাদিকে ঝুকে পড়া।
৫. সিজদায় যাবার সময় বসার জায়গা বা সিজদার জায়গা বার বার পরিস্কার করলে নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়ে যায়। (তবে ক্ষতিকারক হলে একবার সরানো যাবে)
মহানবী (সা:) বলেন-
إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَإِنَّ الرَّحْمَةَ تُوَاجِهُهُ فَلاَ يَمْسَحِ الْحَصَى
‘কোন ব্যক্তি যেন নামাযের অবস্থায় (সিজদার জায়গা হতে) কংকর না সরায়। কেননা আল্লাহর রহমত নামাযী ব্যক্তির উপর প্রসারিত হয়।’ (আহমেদ, নাসায়ী, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ)
৬. একটানা গর্দান খাড়া করে দাড়ানো এবং খুব কর্কশ স্বরে কোরআন পড়া কিংবা গীতের স্বরে কুরআন পাঠ।
৭. জোরে জোরে হাই এবং ঢেকুর তোলা। ইচ্ছা করে গলা খেকরা বা কাশি দিলে নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়।
রাসূল (সা:) বলেন- নামাযে হাই ওঠে শয়তানের প্রভাব থেকে যদি কারো হাই ওঠে তার উচিত সে যেন সাধ্যমতো হাই প্রতিরোধ করে। (মুসলিম, তিরমিযী)
৮. তাড়াহুড়ো করে নামায আদায় করা। নামাযে রুকু সিজদা কিয়াম সঠিক ভাবে আদায় না করা।
নবী (সা:) বলেন,
‘মদখোর, ব্যভিচারী ও চুরি করা কবীরা গুনাহ এবং তার সাজাও খুব তবে সবচেয়ে জঘন্য চুরি হলো সেই যে ব্যক্তি নামাযে চুরি করে। সাহাবীরা বললেন নামাযে কিভাবে চুরি হয়। রাসূল (সা:) বললেন নামাযে রুকু ও সিজদা ঠিকমতো না করা।’ (মালেক, আহমেদ, দারেমী)
৯. নামাযীর সামনে পর্দায় কোন ছবি থাকলে নামাযে খুশু বা একাগ্রতা নষ্ট হয়ে যায়।
নামাযে খুশু সৃষ্টির জন্য যা করতে হবেঃ
১. আল্লাহ তায়ালাকে সবসময় হাজির নাজির জানা।
হাদীসে জীবরীলে ইহসান সম্পর্কে মহানবী (সা:) কে রাসূল (সা:) প্রশ্ন করলে তার প্রতিউত্তরে তিনি বলেন,
أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ
“তুমি এভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে (নামাযে) যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ। আর যদি তোমার পক্ষে এটা সম্ভব না হয়। তবে তুমি অবশ্যই মনে করে নেবে যে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন।”
২. নামাযে পঠিত দোয়া, কালাম অন্তর থেকে পড়া। (তাকবীরে তাহরীমা থেকে শুরু করে সালাম ফিরানো পর্যন্ত রাসুলের শিখানো দোয়াসমূহ পাঠ করা)
৩. নামাযে খুশু সৃষ্টি করার জন্য নামাযীর দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে।
৪. নামাযে একাগ্রতা সৃষ্টির জন্য নামাযে যা পড়া হয় তার অর্থ জানা।
১. নিশ্চিতভাবে মুমিনরা সফলকাম হয়েছে।
২. যারা নিজেদের নামাজে বিনয় ও নম্র।
৩. যারা বাজে বা বেহুদা কথা কাজ থেকে দুরে থাকে।
৪. যারা তাজকিয়া বা পরিশুদ্ধির ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়।
৫. এবং যারা নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।
৬. তবে তাদের স্ত্রীদের ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।
৭. তবে যদি কেউ তাদের ছাড়া অন্য কাউকে (যৌন ক্ষুধা মেটাবার জন্য) কামনা করে তবে তারা হবে সীমালংঘনকারী।
৮. এবং যারা তাদের আমানতসমূহ এবং ওয়াদা চুক্তির (অঙ্গীকার) রক্ষনাবেক্ষন করে।
৯. এবং যারা তাদের নামাযসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষন করে।
১০. তারাই (এসব গুনের অধিকারী) উত্তরাধিকার লাভ করবে।
১১. তারা উত্তরাদিকার হিসাবে ফিরদাউস পাবে এবং সেখানে চিরদিন থাকবে।
সুরা পরিচিতিঃ
সুরা নং- ২৩
মোট আয়াত- ১১৮
মোট রুকু- ৬
নাযিল- মক্কায়
পূর্ববর্তী সুরা- হাজ্জ্ব
পরবর্তী সুরা- নুর
নামকরনঃ
সুরার নামকরন দুই ভাবে হয়ে থাকে-
সুরার মধ্যে থাকা বহুল আলোচিত শব্দ (শব্দ ভিত্তিক)
যেমন- নাস, ফালাক
বিষয়ভিত্তিকঃ যেমন- ফাতেহা, ইখলাস
এ সুরাটি ১ম আয়াতের قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ থেকে নামকরন করা হয়েছে ‘‘সুরা মুমিনুন’’। যার অর্থ মুমিনগণ, বিশ্বাসীগণ, ঈমান আনায়নকারীগণ, The Believers.
মুমিনুনের এক বচন মুমিন এই নামে কুরআনের ৪০ নং সুরা মুমিন অবতীর্ণ হয়েছে।
মুমিনুনের বিপরীথ শব্দ কাফিরূন এই নামে কুরআনের ১০৯ নং সুরা কাফিরূন অবতীর্ণ হয়েছে।
নাযিল হবার সময়কালঃ
সুরাটি মক্কী, হিজরতের পূর্বে নাজিল হয়েছে। তবে ঠিক কোন সময়ে নাজিল হয়েছে তা সঠিক ভাবে বলা যায় না। বর্ণনাভঙ্গি ও বিষয়বস্তু হতে প্রতিয়মান হয় যে, এ সুরা রাসুল করীম (সঃ) এর মক্কী জীবনের মাঝামাঝি সময়ে নাজিল হয়েছিল।
এই সুরা নাযিল হওয়ার আগেই হযরত ওমর রা: ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন এই সুরাটি তার সামনেই নাযিল হয়। অহি নাযিলের সময় রাসুলের অবস্থা কেমন হয় তা তিনি স্বচক্ষে দেখেছিলেন (সুরা মুজ্জাম্মিলের ৫নং আয়াত)।
শানে নুযূল/পটভূমিঃ
অত্র সুরা বিশেষ করে তেলাওয়াতকৃত আয়াতগুলো নাজিলের মক্কার কাফেররা যেমন ছিল ইসলামের চরম বিরোধী তেমনি পার্থিব উপকরণ সব ছিল তাদের হাতের মুঠোয় (বাণিজ্য)। অপরদিকে মুসলমানদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। (আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানগত)। এই অবস্থায় কাফেররা নিজেদের অধিক সফল এবং মুসলমানদের ব্যর্থ মনে করত। তখন মুমিনদের প্রকৃত সফলতার ঘোষণা দিয়ে এ আয়াতগুলি নাজিল করেন।
প্রকৃত সফলতার অর্থ তাফসীর কারকগণ ব্যাখ্যা করেছেন কোন একটি সুন্দর দালানে এক ব্যক্তি ৫ দিন থাকতে পারবে এবং যদি কুড়েঘরে থাকে তবে সারাজীবন থাকতে পারবে- এক্ষেত্রে একজন বুদ্ধিমান কোনটি বেছে নেবে।
অথচ আখেরাতে চিরজীবনের জন্য সুন্দর ব্যবস্থা আছে।
মূল বিষয়বস্তুঃ
এ সুরার মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে রাসুলের আনুগত্য করার আহ্বান। সুরার প্রথমে এ আলোচনা করা হয়েছে যে, নবীর অনুসারী মুমিনদের কতিপয় গুনাবলী রয়েছে, এই বিশেষ গুণাবলী অর্জনকারীরাই সফলকাম। ইহকালে ও পরকালে তারাই সাফল্য লাভকরবে। পরে এ সুরায় মানব সৃষ্টির বিভিন্ন স্তরের কথা আলোচনা করা হয়েছে এবং স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, যিনি সৃষ্টি করতে সক্ষম তিনি তোমাদেরকে পরকালে তার সামনে হাজির করতেও সক্ষম। তিনি তোমাদের হিসাব-কিতাব নিবেন। এ সুরায় আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। তেমনিভাবে বিভিন্ন উম্মতের কথা উল্লেখ করে তাদের পরিনতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে যেন দুনিয়াবাসী নবী করীম (সঃ) এর আনুগত্য করে, আল্লার বিধানকে মেনে নেয়, তারই ইবাদত করে। আল্লাহর ও তার রসুলের আনুগত্য না করলে কেউ মুক্তি পাবে না এসব বিষয়গুলিই এ সুরায় আলোচনা করা হয়েছে।
সুরা মুমিনুনের ফজিলতঃ
হযরত উমর (রাঃ) বলেন রসুল (সঃ) এর প্রতি যখন অহি নাজিল হত তখন মৌমাছির গুঞ্জনের ন্যায় আওয়াজ শুনা যেত। একদিন তাঁর কাছে এমনি আওয়াজ শুনে আমরা অহি শুনার জন্য থেমে গেলাম। অহির বিশেষ এ অবস্থার শেষ হলে নবী করীম (সঃ) কেবলামুখী হয়ে বসে পড়লেন এবং দোয়া, করতে লাগলেন,
اَللّهُمَّ زِدْنَا وَلَا تَنْقُصْنَا وَأَكْرِمْنَا وَلَا تُهِنَّا وَأَعْطِنَا وَلَا تَحْرِمْنَا وَآثِرْنَا وَلَا
تُؤْثِرْ عَلَيْنَا وَاَرْضِنَا وَارْضَ عَنَّا
“হে আল্লাহ! আমাদেরকে বেশী দাও কম দিওনা। আমাদের সম্মান বৃদ্ধি কর- লাঞ্ছিত করো না। আমাদেরকে দান কর-বঞ্চিত করো না। আমাদেরকে অন্যের উপর অধিকার দাও অন্যদেরকে আমাদের উপর অগ্রাধিকার দিয়ো না, আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাক এবং আমাদেরকে তোমার সন্তুষ্ট কর।”(তিরমিজি)
এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ এক্ষণে দশটি আয়াত নাযিল হয়েছে। কেউ যদি এ আয়াতগুলো পুরোপুরি পালন করে, তবে সে সোজা জান্নাতে যাবে। এরপর তিনি সুরা মুমিনুনের প্রথম দশটি আয়াত পাঠ করে শোনালেন। (আহমাদ)
ইমাাম নাসায়ী তফসীর অধ্যায়ে ইয়াযিদ ইবনে কাবনুস বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আয়েশা (রাঃ) কে প্রশ্ন করা হয় যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর চরিত্র কিরূপ ছিল? তিনি বললেন তার চরিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে অতঃপর তিনি এই দশটি আয়াত তেলাওয়াত করে বললেনঃ এগুলোই ছিল রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর চরিত্র ও অভ্যাস। (ইবনে কাসীর)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাঃ
এখানে قد افلح মানে সফলকাম হয়ে গেছে।
ইংরেজি করলে করলে যার অর্থ হবে He had been Succeed.
-ভবিষ্যতের সফলতার নিশ্চয়তা বুঝাতে Past Perfect Continuous tense ব্যবহার করা হয়েছে।
যেহেতু সফলতার ঘোষনা মুমিনদের জন্য, তাই আমাদের জানতে হবে ঈমান কি?
-ঈমান মানে বিশ্বাস, যার কেন্দ্রবিন্দু হলো আল্লাহ সোবহানাহু ওয়া তায়ালা।
-ঈমানে ১ম সাক্ষ্য হলো কালেমার ঘোষনা দেয়া (কালেমায়ে তাইয়্যেবা ও কালেমায়ে শাহাদাত যার বিষয়বস্তু)
-এছাড়া ঈমানে মুফাসসালের ৭টি বিষয় হলো ঈমানে পূর্নাঙ্গ ও বিস্তারিত বিষয় (কুরআনে রয়েছে ৬টি পর্যায়ের কথা)
-এই ৭টি পর্যায় আবার ৩টি দিকের সাথে সম্পর্কিত (তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত) [মজবুত ঈমান বই]
-ঈমানের শর্তই হলো গায়েবের প্রতি বিশ্বাস (ইয়ুমিনুনা বিল গাইবি...বাকারা)
-অথচ নাস্তিকরা বলে যা দেখি না তা বিশ্বাস করে (মজবুত ঈমান বই)
-ঈমানের পর্যায় তিনটি- ইকরার বিল লিসান, তাশদীদ ফিল জিনান, আমল বিল আরকান (ওমিনান নাসি মাইয়া কুলু.....খেরাদনে কার কেহবি দিয়া.....আবু তালেবের মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তের ঘটনা)
-ঈমান মোট শাখা ৬০-৭০টির বেশি (আল ঈমানু বিদয়ু ও সাবয়ুনা আও বিদয়ু ও সিত্তুনা শুবা.....ও আদনাহা ইমাতাত আল আদয়া আনিন তারিখ....) [আবু হুরাইয়া: মুত্তাফাকুন আলাইহি]
অর্থাৎ সবচেয়ে বড় শাখা কালেমার ঘোষনা, সবচেয়ে ছোট শাখা পথ থেকে কাঁটা সরানো
-প্রকৃত ঈমান প্রমান হয় পরিক্ষা আসলে,
"কার কতটা ঈমান আছে সময় হলো পরিক্ষার....(মল্লিক)
-আহাসিবান্নাসু আইয়ুত রাকু আইয়া কুলু আমান্না....(আনকাবুত-২)
-ঈমানে দাবি সেতো বসে থাকা নয়, ঈমান দাবি হলো কিছু বিনিময়....(মল্লিক)
-যে ঈমান প্রয়োজনে জ্বলে ওঠে না....
-তাই আমাদের ঈমান এক্বীন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে...(ইলমাল ইয়াক্বীন ও আইনাল ইয়াক্বীন)
-হযরত ওমর রা. বলেন, আল্লাহর জান্নাত দেখলে আমি অবাক হবো না.... (অথচ হাদিসে আছে- মা লা আইয়ুন রাদ)
আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহ তায়লা সেসব মুমিনকে সাফল্য দান করার ওয়াদা করেছেন। যারা আয়াতে উল্লিখিত ৭ টি গুনে গুনান্বিত। পরকালের পূর্ণাঙ্গ সাফল্য এবং দুনিয়ার সম্ভাব্য সাফল্য সবই এই ওয়াদার অন্তর্ভুক্ত।
এই আয়াতসমূহ ছাড়াও কুরআনে সফল মুমিনদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন:
সুরা আনফলের ২-৩ আয়াতে বলা হয়েছে ৫ টি গুণের কথা:
১. আল্লাহর স্মরণে অন্তর কেঁপে উঠে।
২. আল্লাহর আয়াত শুনলে ঈমান বাড়তে থাকে।
৩. আল্লাহর প্রতি একমাত্র ভরসা করে।
৪. সালাত কায়েম করে।
৫. রিযিক থেকে দান করে।
সুরা তাওবার ৭১ নং আয়াতে বলা হয়েছে ৪ টি গুণের কথা:
১. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা।
২. সালাত কায়েম করা।
৩. যাকাত আদায় করা।
৪. আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করা।
সুরা আহযাবের ৩৫ নং আয়াতে ১০ টি গুণের কথা বলা হয়েছে:
১. আত্মসমর্পনকারী
২. বিশ্বাসী
৩. অনুগত
৪. সত্যবাদী
৫. ধৈর্য্যশীল
৬. বিনয়ী
৭. দানশীল
৮. রোজাদার
৯. লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী
১০. আল্লাহর জিকিরকারী।
উল্লেখিত আয়াতগুলোতে মুমিনদের সাতটি গুণ:
সর্বপ্রথম গুন হলো ঈমানদার হওয়া। কিন্তু এটা একটা বুনিয়াদী ও মৌলিক বিষয় বিধায় এটাকে এই সাতটি গুনের মধ্যে শামিল না করে পর পর সাতটি গুন বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রথম গুনঃ
‘‘যারা তাদের নামাযে বিনয়ী ও নম্র’’
নামাযে খুশু বলতে বিনয় ও নম্র হওয়া বুঝায়। খশুর আভিধানিক অর্থ স্থিরতা। শরীয়তের পরিভাষায় এর মানে অন্তরে স্থিরতা থাকা। অর্থ্যাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর কল্পনা অন্তরে ইচ্ছাকৃত ভাবে না করা এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্থির রাখা।
দিলের খুশু হয় তখন যখন কারো ভয়ে বা দাপটে দিল ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। আর দেহের খুশু এভাবে প্রকাশ পায় যে, কারো সামনে গেলে তার মাথা নিচু হয়ে যায়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে পড়ে চোখের দৃষ্টি নত হয়ে আসে, গলার স্বর ক্ষীণ হয়ে যায়।
হাদীসে হযরত আবু যার (রা:) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা:) বলেন- নামাযের সময় আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি সর্বক্ষণ দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখেন যতক্ষণ না নামাযী অন্যদিকে ভ্রুক্ষেপ করে। যখন সে অন্যকোন দিকে ভ্রুক্ষেপ করে তখন আল্লাহ তায়ালা তার দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন। (নাসায়ী) (আবু দাউদ)
যেসব কাজ নামাযে খুশু সৃষ্টিতে বাধা দেয়ঃ
১. নামাযের মধ্যে নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে খেলা করা বা নাড়াচাড়া করা।
হাদীস- একবার নবী (সা:) এক ব্যক্তিকে নামাযের মধ্যে মুখের দাড়ী নিয়ে খেলা করতে দেখে বললেন-
لَوْ خَشَعَ قَلْبُ هذَا خَشَعَتْ جَوَارِحُه
“যদি এ লোকটির দিলে খুশু থাকত তাহলে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপরও খুশু থাকত। (বায়হাকী)
২. নামাযে এদিক ওদিক তাকালে নামাযে একগ্রতা বা খুশু নষ্ট হয়ে যায়। এ সম্পর্কে নবী (সা:) বলেন- এটা নামাযীর (মনোযোগের) উপর শয়তানের থাবা।
৩. নামাযে ছাদ বা আকাশের দিকে তাকালে নামাযের খুশু নষ্ট হয়ে যায়। নবী করিম (সা:) বলেন-
‘লোকেরা যেন নামাযে তাদের চোখকে আকাশমুখী না করে। (কেননা তাদের চোখ) তাদের দিকে ফিরে নাও আসতে পারে।’(বুখারী)
৪. নামাযে হেলা-ফেলা করা ও নানাদিকে ঝুকে পড়া।
৫. সিজদায় যাবার সময় বসার জায়গা বা সিজদার জায়গা বার বার পরিস্কার করলে নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়ে যায়। (তবে ক্ষতিকারক হলে একবার সরানো যাবে)
মহানবী (সা:) বলেন-
إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَإِنَّ الرَّحْمَةَ تُوَاجِهُهُ فَلاَ يَمْسَحِ الْحَصَى
‘কোন ব্যক্তি যেন নামাযের অবস্থায় (সিজদার জায়গা হতে) কংকর না সরায়। কেননা আল্লাহর রহমত নামাযী ব্যক্তির উপর প্রসারিত হয়।’ (আহমেদ, নাসায়ী, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ)
৬. একটানা গর্দান খাড়া করে দাড়ানো এবং খুব কর্কশ স্বরে কোরআন পড়া কিংবা গীতের স্বরে কুরআন পাঠ।
৭. জোরে জোরে হাই এবং ঢেকুর তোলা। ইচ্ছা করে গলা খেকরা বা কাশি দিলে নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়।
রাসূল (সা:) বলেন- নামাযে হাই ওঠে শয়তানের প্রভাব থেকে যদি কারো হাই ওঠে তার উচিত সে যেন সাধ্যমতো হাই প্রতিরোধ করে। (মুসলিম, তিরমিযী)
৮. তাড়াহুড়ো করে নামায আদায় করা। নামাযে রুকু সিজদা কিয়াম সঠিক ভাবে আদায় না করা।
নবী (সা:) বলেন,
‘মদখোর, ব্যভিচারী ও চুরি করা কবীরা গুনাহ এবং তার সাজাও খুব তবে সবচেয়ে জঘন্য চুরি হলো সেই যে ব্যক্তি নামাযে চুরি করে। সাহাবীরা বললেন নামাযে কিভাবে চুরি হয়। রাসূল (সা:) বললেন নামাযে রুকু ও সিজদা ঠিকমতো না করা।’ (মালেক, আহমেদ, দারেমী)
৯. নামাযীর সামনে পর্দায় কোন ছবি থাকলে নামাযে খুশু বা একাগ্রতা নষ্ট হয়ে যায়।
নামাযে খুশু সৃষ্টির জন্য যা করতে হবেঃ
১. আল্লাহ তায়ালাকে সবসময় হাজির নাজির জানা।
হাদীসে জীবরীলে ইহসান সম্পর্কে মহানবী (সা:) কে রাসূল (সা:) প্রশ্ন করলে তার প্রতিউত্তরে তিনি বলেন,
أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ
“তুমি এভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে (নামাযে) যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ। আর যদি তোমার পক্ষে এটা সম্ভব না হয়। তবে তুমি অবশ্যই মনে করে নেবে যে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন।”
২. নামাযে পঠিত দোয়া, কালাম অন্তর থেকে পড়া। (তাকবীরে তাহরীমা থেকে শুরু করে সালাম ফিরানো পর্যন্ত রাসুলের শিখানো দোয়াসমূহ পাঠ করা)
৩. নামাযে খুশু সৃষ্টি করার জন্য নামাযীর দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে।
৪. নামাযে একাগ্রতা সৃষ্টির জন্য নামাযে যা পড়া হয় তার অর্থ জানা।
৫. সালাত কায়েমের সঠিক তৎপর্য জানা। (সালাতের একটি তাৎপর্য হলো সমতা বিধান)
আল্লামা ইকবাল বলেন, ‘‘একি সামনে খাড়ে হো গে মাহমুদ ও আয়াজ, নাকো বান্দা নাহা নাকো বান্দা নায়াজ’’
আর এভাবে সালাত আদায় করতে পারলে েই সালাত হবে, ‘‘ইন্না সালাতি ও নুসুকি ওমা হিয়ায়া ও মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’’ (নামাজ পারে রুখতে সকল অন্যায় অশ্লীল....)
দ্বিতীয় গুনঃ
‘যারা বেহুদা কাজ ও কথা থেকে দুরে থাকে।’
অর্থাৎ এমন প্রতিটি কাজ এবং কথাকে যা অপ্রয়োজনীয়, অর্থহীন ও নিস্ফল। যেসব কথা এবং কাজের কোনই ফল নেই।
اللَّغْوُ “এর অর্থ উচ্চস্তরের গুনাহ যাতে ধর্মীয় উপকার তো নেই বরং ক্ষতি বিদ্যমান।
রাসূল (সা:) বলেন-
مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُه مَالَا يَعْنِيْهِ
“মানুষ যখন অনর্থক বিষয়াদি ত্যাগ করে তখন ইসলাম সৌন্দর্যমন্ডিত হয়।(তিরমিজি)।”
আল্লাহ বলেন-
وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا
অর্থ্যাৎ- “যখন এমন কোন জায়গা দিয়ে তারা চলে যেখানে বাজে কথা হতে থাকে অথবা বাজে কাজের মহড়া চলে তখন তারা ভদ্রভাবে সে জায়গা অতিক্রম করে চলে যায়।” ( ফুরকান-৭২)
-জান্নাতি বৈশিষ্ট্য এমন হবে। জান্নাতে কোন বেহুদা কথা বা কাজ হবে না (লা ইয়াসমায়ুনা ফি লাগওয়াও ওলা কিজ্জাবা)
وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا
অর্থ্যাৎ- “যখন এমন কোন জায়গা দিয়ে তারা চলে যেখানে বাজে কথা হতে থাকে অথবা বাজে কাজের মহড়া চলে তখন তারা ভদ্রভাবে সে জায়গা অতিক্রম করে চলে যায়।” ( ফুরকান-৭২)
-জান্নাতি বৈশিষ্ট্য এমন হবে। জান্নাতে কোন বেহুদা কথা বা কাজ হবে না (লা ইয়াসমায়ুনা ফি লাগওয়াও ওলা কিজ্জাবা)
-আল্লাহর প্রিয় বান্দারা অনর্থক বিতর্ক থেকে বেঁচে থাকে (ও ইয়া খাতাবুহুম জাহিলুনা ক্বলু সালাম)
-আমাদের উচিত চুপ থাকার অভ্যাস (ওমান সমাতা নাজাহ....ফাল ইয়াকুল খাইর আওলি আসমত...সময় হলো ধারালো চুরির মত)
-মুমিনের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত গনিমত মনে করা উচিৎ (জিন্দেগী ইনসানু কি এক দমকে সাওয়া কুচ বি নেহি....Out out brief canddle....)
-অযত্নে সময় কাটানো আমাদের উপমহাদেশের মানুষদের মধ্যে বেশি (জন দশেকে জটলা করি তক্তপোষে বসে....জীবনের স্রোত আকাশে ঢালি, হৃদয় তলে বহ্নি জ্বালি চলিছে নিশীদিন)
তৃতীয় গুনঃ
“যারা যাকাত বা পরিশুদ্ধির ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়"
যাকাত দেয়া বা যাকাতের পথে কর্মতৎপর সক্রিয় হওয়ার মধ্যে অর্থের দিক দিয়ে বিকট পার্থক্য বিদ্যমান।
মুমিনদের বৈশিষ্ট্য হিসাবে কুরআনের
বিশেষ ধরনের অর্থের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এটা বলার পেছনে তাৎপর্য আরবী ভাষায় যাকাত শব্দের দুটি অর্থ বিদ্যমান
১। বিত্রতা, পরিশুদ্ধতা, পরিশুদ্ধি।
২। বিকাশ সাধন কোন জিনিসের সাধনে যেসব জিনিস প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায় সেসব দুর করা এবং তার মৌলবস্তুকে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করা।
এই দুটি ধারনা মিলিয়ে যাকাতের পরিপূর্ণ ধারনা সৃষ্টি হয়। তারপর এই শব্দটি, ইসলামী পরিভাষায় ব্যবহৃত হলে এর দু’টি অর্থ প্রকাশ পায়-
১) এমন সম্পদ যা পরিশুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে বের করা হয়।
২) পরিশুদ্ধ করার মূল কাজটি-
যদি বলা হয় তবে এর অর্থ হবে তারা সম্পদ পরিশুদ্ধির উদ্দেশ্যে সম্পদের একটি অংশ নেয়।
কিন্তু যদি বলা হয় তবে তার অর্থ হবে তারা পবিত্রতা, পরিশুদ্ধতা তাযকিয়ার কাজ করছে। এ অবস্থায় ব্যাপারটি শুধুমাত্র আর্থিক যাকাত আদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং এর অর্থ ব্যাপক হবে। যেমনঃ
Ø আত্মার পরিশুদ্ধি
Ø চরিত্রের পরিশুদ্ধি
Ø জীবনের পরিশুদ্ধি
Ø তার পারিবারিক পরিশুদ্ধি
Ø নিজের, সমাজ এবং রাষ্ট্রের পরিশুদ্ধি।
Ø অর্থের পরিশুদ্ধি।
উপরোক্ত প্রত্যেকটি দিকের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত এর ব্যপ্তি ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া এর অর্থ কেবল নিজেরই জীবনের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। না বরং নিজের চারপাশের জীবনের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়বে।
কুরআনের অন্যত্র আল্লাহ বলেন,
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى (১৪) وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى (১৫)
অর্থ্যাৎ “কল্যাণ ও সফলতা লাভ করল সে, যে পবিত্রতার কাজ করলো এবং নিজের রবের নাম স্মরণ করে নামায পড়লো।” (সুরা আ’লা:১৪,১৫)
আল্লাহ বলেন-
قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا (৯) وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا (১০)
“সফলকাম হলো সে, যে নিজের নফসকে পবিত্র বা তাযকিয়া করলো। আর ব্যর্থ হলো সে যে নিজেকে কলুষিত করল।” (সুরা আশ শামস:৯,১০)
এ আয়াতে গোটা সমাজ জীবনের কথা বলা হয়েছে।
চতুর্থ গুণঃ
‘'যারা লজ্জাস্থানের হেফাজত করেন। তবে তাদের স্ত্রীদের এবং মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না করলে তারা তিরস্কৃত হবে না। তবে কেউ যদি এদের ছাড়া অন্য কাউকে কামনা তবে এক্ষেত্রে তারা হবে সীমালংঘনকারী।"
লজ্জাস্থান হেফাজত করার দুটি অর্থ হতে পারে।
১) নিজের লজ্জাস্থান ঢেকে রাখা।
২) যৌন শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাগামহীন হয় না।
এটি প্রাসঙ্গিক বাক্য। “লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।” বাক্য থেকে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার জন্য।
লজ্জাস্থানের সাধারণ হুকুম থেকে দু’ধরনের লোককে বাদ দেয়া হয়েছে।
১. স্ত্রী অর্থাৎ যেসব নারীকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা হয়েছে।
২. দাসী অথাৎ এমন বাদী যার উপর মানুষের মালিকানা অধিকার আছে। সুতরাং মালিকানাধীন দাসীদের যৌনসম্পর্ক বৈধ এবং বৈধতার ভিত্তি বিয়ে নয়। কারণ এখানে স্ত্রী ও দাসী আলাদা ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এ বাক্যটি উপরোক্ত দুটি পন্থা ছাড়া কামনা চরিতার্থ করার যাবতীয় পথ অবৈধ করেছে। হারাম উপায়গুলি-
২. যিনা যেমন হারাম তেমনি হারাম নারীকে বিয়ে করাও যিনার মধ্যে গণ্য।
২. স্ত্রী অথবা দাসীর সাথে হায়েজ-নেফাস অবস্থায় কিংবা অস্বাভাবিক পন্থায় সহবাস হারাম।
৩.পুরুষ, বালক বা জীবজন্তুর সাথে কামনা চরিতার্থ করা হারাম।
৪. অধিকাংশ তাফসীরবিদগণের মতে হস্তমৈথুন এর অন্তর্ভুক্ত।
৫. এছাড়া যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোন অশ্লীল-বই পড়া, ছবি দেখা।
উপরোক্ত সবকিছুই সীমালংঘনের মধ্যে গণ্য হবে।
৫ম ও ৬ষ্ঠ গুনঃ
‘তাদের আমানতসমূহ এবং ওয়াদা বা প্রতিশ্রতি রক্ষা করে।’
আমানত প্রত্যাপর্ন করাঃ
আমানত শব্দের অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক। আভিধানিক অর্থে এমন একটি বিষয় শামিল যার দায়িত্ব কোন ব্যক্তি বহন করে এবং সে বিষয়ে কোন ব্যক্তির উপর আস্থা রাখা যায় ও ভরসা করা যায়। বিধায় আমানত শব্দটি বহুবচন অর্থে ব্যবহৃত।
দু’ধরনের আমানত সংক্রান্ত কথা-
১. হক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক।
২. হক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক।
-শরীয়ত আরোপিত সকল ফরজ ও ওয়াজিব পালন করা এবং যাবতীয় হারাম ও মাকরুহ বিষয় থেকে দুরে থাকা।
-মানুষ আল্লাহর খলিফা। খিলাফতের দায়িত্ব পালনের আমানত রক্ষা করা।
২) হক্কুল ইবাদঃ
-কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কর্তৃক আরোপিত ধনসম্পদের আমানত।
-গোপন কথার আমানত।
-মজুর, শ্রমিক ও চাকরীজীবীদের জন্য যে কার্য সময় নির্ধারন করে দেয়া হয় তা পালন।
-দায় দায়িত্বের আমানত। সংগঠন, ব্যক্তি, রাষ্ট্র, পরিবার পরিচালক হিসেবে।
-গণতান্ত্রিক দেশে ভোটারদের ভোট আমানত।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا
আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় আমানত তার হকদারদরে হাতে ফরেত দবোর নর্দিশে দচ্ছিনে৷ (সূরা নিসা:৫৮)
রাসুল (সা:) বলেন:
إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَه لَا
“তার ঈমান নেই যার আমানতদারী নেই।” (আহমাদ)
তাছাড়া মোনাফেকের যে চারটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তন্মধ্যে একটি হচ্ছে ১) ‘কোন আমানত তার কাছে সোপর্দ করা হলে সে তার খেয়ানত করে।’ (বুখারী)
وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ.
অঙ্গীকার পূর্ণ করাঃ
অঙ্গীকার বলতে প্রথমত, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বুঝায় যা কোন ব্যাপারে উভয়পক্ষ অপরিহার্য করে নেয়। এরুপ চুক্তি পূর্ণ করা ফরজ।
দ্বিতীয় প্রকার অঙ্গীকারকে ওয়াদা বলা হয় অর্থ্যাৎ এক তরফাভাবে একজন অন্যজনকে কিছু দেয়ার বা কোন কাজ করে দেয়ার অঙ্গীকার করা।
হাদীসে আছে, “ওয়াদাও এক প্রকার কসম”
সপ্তম গুনঃ
“যারা তাদের নামায সমূহকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে।”
এখানে পাঁচওয়াক্ত নামায মুস্তাহাব বা আউয়াল ওয়াক্তে যথাযথভাবে পাবন্দী সহকারে আদায় করা বুঝায়।
এখানে নামায সমূহের সংরক্ষণ বলতে নামাযের বাইরের এবং ভেতরের যাবতীয় নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করা। অর্থ্যাৎ আরকান-আহকাম পালন।
১। শরীর, পোশাক, পরিচ্ছদ পাক পবিত্র।
২। সময়মত নামায।
৩। অযু ঠিকভাবে করে নামায আদায়।
৪। জামায়াতের সাথে নামায।
৫। শুদ্ধ, ধীরস্থিরভাবে দোয়া কালাম পাঠ করা।
৬। নামায প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নামাযের হেফাজত করা।
৭। এহসানের সাথে নামায আদায়।
১১নং আয়াতঃ
‘‘তারা (এসবগুনের অধিকারীগণই) উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা উত্তরাধিকার হিসেবে ফেরদাউস পাবে এবং সেখানে চিরদিন থাকবে"
এখানে উত্তরাধিকারী বলা হয়েছে এজন্য যে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ যেমন উত্তরাধিকারদের নিশ্চিত প্রাপ্য। এবং গুণের অধিকারীদেরও জান্নাতে প্রবেশ সুনিশ্চিত।
সফলকাম ব্যক্তিদের গুনাবলী পুরোপুরি উল্লেখ করার পর এই বাক্যে আরও ইঙ্গিত আছে যে পূর্ণাঙ্গ সফল জান্নাতী ব্যক্তি।’’
الْفِرْدَوْس শব্দটি এমন একটি বাগানের জন্য বলা হয়ে থাকে যার চারিদিকে পাচিল দেয়া থাকে। বাগানটি বিস্তৃত হয়। মানুষের আবাস গৃহের সাথে সংযুক্ত হয় এবং সব ধরনের ফল বিশেষ করে আঙ্গুর পাওয়া যায়। কোন কোন ভাষায় এর অর্থের মধ্যে এ কথাও বোঝায় যে এখানে বাছাই করা গৃহপালিত পশু পাখি পাওয়া যায়।
কুরআনে বিভিন্ন সমষ্টিকে ফিরদাউস বলা হয়েছে।
“তাদের আপ্যায়নের জন্য ফিরদৌসের বাগানগুলি আছে।”
এ থেকে মনের মধ্যে এ ধারনা জন্মে যে ফিরদৌস একটা বড় জায়গা, যেখানে অসংখ্য বাগ বাগিচা উদ্যান রয়েছে।
শিক্ষাঃ
১। সফলতা নিছক ঈমানের ঘোষনা দেয়ার নাম নয় বরং 'ঈমানান কামেলা'র নাম।
‘‘তারা (এসবগুনের অধিকারীগণই) উত্তরাধিকার লাভ করবে। তারা উত্তরাধিকার হিসেবে ফেরদাউস পাবে এবং সেখানে চিরদিন থাকবে"
এখানে উত্তরাধিকারী বলা হয়েছে এজন্য যে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ যেমন উত্তরাধিকারদের নিশ্চিত প্রাপ্য। এবং গুণের অধিকারীদেরও জান্নাতে প্রবেশ সুনিশ্চিত।
সফলকাম ব্যক্তিদের গুনাবলী পুরোপুরি উল্লেখ করার পর এই বাক্যে আরও ইঙ্গিত আছে যে পূর্ণাঙ্গ সফল জান্নাতী ব্যক্তি।’’
الْفِرْدَوْس শব্দটি এমন একটি বাগানের জন্য বলা হয়ে থাকে যার চারিদিকে পাচিল দেয়া থাকে। বাগানটি বিস্তৃত হয়। মানুষের আবাস গৃহের সাথে সংযুক্ত হয় এবং সব ধরনের ফল বিশেষ করে আঙ্গুর পাওয়া যায়। কোন কোন ভাষায় এর অর্থের মধ্যে এ কথাও বোঝায় যে এখানে বাছাই করা গৃহপালিত পশু পাখি পাওয়া যায়।
কুরআনে বিভিন্ন সমষ্টিকে ফিরদাউস বলা হয়েছে।
“তাদের আপ্যায়নের জন্য ফিরদৌসের বাগানগুলি আছে।”
এ থেকে মনের মধ্যে এ ধারনা জন্মে যে ফিরদৌস একটা বড় জায়গা, যেখানে অসংখ্য বাগ বাগিচা উদ্যান রয়েছে।
শিক্ষাঃ
১। সফলতা নিছক ঈমানের ঘোষনা দেয়ার নাম নয় বরং 'ঈমানান কামেলা'র নাম।
২। পার্থিব ও বৈষয়িক প্রাচুর্য ও সম্পদশালীতা সফলতা নয়। আখেরাতের স্থায়ী সাফল্যই প্রকৃত সাফল্য। (অল আখিরাতি খাইরু ও আবকা)
৩। খুশু খুযুর সাথে নামায আদায় করতে হবে।
৪। বাজে কথাও কাজে সময় নষ্ট না করা।
৫। সর্ববস্থায় নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে সচেষ্ট হওয়া।
৬। অবৈধ পন্থায় কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার চিন্তাও না করা। (ওলা তাকরুবুজ জিনা)
৭। আমানতের হেফাজত করা এবং অঙ্গীকার বা ওয়াদা যথাযথভাবে পালন করা।
৮। প্রত্যেক নামায মোস্তাহাব ওয়াক্তে আদায় করা।
৩। খুশু খুযুর সাথে নামায আদায় করতে হবে।
৪। বাজে কথাও কাজে সময় নষ্ট না করা।
৫। সর্ববস্থায় নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে সচেষ্ট হওয়া।
৬। অবৈধ পন্থায় কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার চিন্তাও না করা। (ওলা তাকরুবুজ জিনা)
৭। আমানতের হেফাজত করা এবং অঙ্গীকার বা ওয়াদা যথাযথভাবে পালন করা।
৮। প্রত্যেক নামায মোস্তাহাব ওয়াক্তে আদায় করা।
1 Comments
Alhamdulillah
ReplyDelete