- মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সা. সর্ব কালের, সর্ব যুগের, সর্বশেষ্ঠ মহামানব।
- যার জীবনের প্রতিটি দিক উম্মাহ'র জন্য অনুকরণীয়, অনুসরণীয়।
- আল কুরআন মুহাম্মদ সা. কে বাঁচিয়ে রাখবেন কাল থেকে কালান্তরে, যুগ থেকে যুগান্তরে।
- এজন্য কুরআনের প্রতিটি আয়াতের সাথে নবী আরাবী সা. সম্পৃক্ত (আয়েশা রা. বলেছেন, 'সমগ্র কুরআনই তার চরিত্র'/সাফিয়া রা. বলেছেন, 'তিনি জীবন্ত কুরআন যা জমিনে হাঁটছে')
- তিনি হ্যাঁ বললে হালাল হয়, না বললে হারাম হয়, তার চুপ থাকটাও দলিল। (মা আতাকুমুর রাসুলু ফা খুজুহু | হাশর-৭)
- ব্যক্তি, পরিবার, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতি, যুদ্ধনীতি, বন্দিনীতি, সন্ধি নীতি পৃথিবীর সকল বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন, এমনকি গাছের পাতাটা ছিঁড়বে কিনা?
- জন্মের প্রথম দিন থেকে তিনি মানবতার জন্য একটি দৃষ্টান্ত
- জন্মের পর তার প্রথম কথা ছিল-'আল্লাহু আকবার কাবিরা'
- এই রকম আর একজন নবী(ঈসা) শিশু অবস্থায় কথা বলেছেন, 'ইন্নি আবদুল্লাহ আতানিয়াল কিতাব ওজায়ালানি নাবিয়্যা'(মারইয়াম-৩০)
- শিশু মুহাম্মদ ছিলেন এ পৃথিবীর শিশুদের জন্য এক ইনসাফের মুর্ত প্রতীক।
- তার দুধ মা হালিমার একটা স্তন থেকে তিনি দুধ পান করতেন, আরকটা স্তন দুধ বোনের জন্য রেখে দিতেন।
- হালিমা বলেন, 'ছোট বেলায় কখনো ক্ষুধার কারনে কাঁদতেন না, লজ্জাস্থান থেকে কাপড় সরে গেলে কেঁদে উঠতেন।
- ছোট বেলা থেকে তিনি ছিলেন সবার চেয়ে আলাদা, অন্য ছেলেরা যা করতেন তিনি তা করতেন না।
- যুবক বয়সে চাচার সাথে ব্যবসার কাজে বের হওয়ার পথে প্রচন্ড রোদে একটি মেঘের আস্তরন তার উপর দিয়ে ছায়া দিচ্ছিল।
- এ দৃশ্য দেখে পাদ্রী বহিরা বলেছিল, 'আমি তার চেহারার মধ্যে আখেরি নবীর ছিহ্ন দেখতে পাচ্ছি'
- যুবক বয়স থেকে তিনি সমাজের মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে গঠন করেছিলেন 'হিলফুল ফুযুল' বা শান্তি সংঘ।
- নবুয়্যাত প্রাপ্তির পূর্বেই তিনি ছিলেন 'আল আমিন' বা বিশ্বাসী ও 'আস সুদুক' বা সত্যবাদী।
- মক্কার সকল মানুষ তার কাছে আমানত গচ্ছিত রাখতো।
- এই কথায় নাজ্জাসীর দরবাশে হযরত জাফর রাঃ বলেছিলেন, 'নারিফু নাসাবাহু ও সিদকাহু ও আমানাতাহু ও আফাফাহু'
- নবুয়্যাত লাভের পর তিনি হয়ে গেলেন আরবের কাফিরদের চক্ষুশূল।
- তিনি যখন বলেছিলেন, 'ইয়া আইয়ুহান্নাস! কুলু লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ তুফলিহুন'
- তখন আবু লাহাব বলেছিল, 'তাব্বাল্লাকা ইয়া মুহাম্মদ, আবি হাজা দাওয়াতিনা'
- স্বার্থে আঘাত লাগলে সবচেয়ে সম্মানিত মানুষটিকেও অপমানিত হতে হয়।
- তায়েফে তাকে কি বলে পাথর মারছিল আল্লাহ তা কুরআনে উল্লেখ করছেন, 'লাওলা নুজ্জিলা হাজাল কুরআনা আলা রাজুলিম মিনাল কারইয়া তাইনি আজীম | যুখরুফ-৩১
- রাসুলে কারীম সা. তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব দিয়ে ইসলামের সুমহান আদর্শকে সম্প্রসারণ করেছেন।
- রাসুল সা. বলতেন আল্লাহ আমাকে ৬টি ব্যতিক্রম জিনিস দান করছেন। এর একটা হলো 'ও মুসিরতু বির রওফ' (অসাধারণ ব্যক্তিত্ব)
- যার কারনে শত অপপ্রচার শুনেও মানুষগুলো ইসলামের দিকে দীক্ষিত হয়েছে।
- পথের মাঝে তার কাঁটা বিচিয়ে দিতে যে মহিলা, তার অসুস্থতায় তাকে সেবা করতে হাজির হয়েছেন।
- মক্কা বিজয়ের দিন তিনি জনৈক বুড়ির জিনিসপত্র বহন করে পথচলায় সহযোগিতা করেছেন।
- তার ব্যক্তিত্বে এতো সুক্ষ চমৎকার বিষয় উপস্থিত ছিল যে, নবুয়্যাতের দায়িত্ব পালনে সদা ব্যস্ত থাকা নবীজী ছোট্ট শিশুটির কথা ভুলে যাননি।
- সেই ছোট্ট সাহাবীকে দেখে জিজ্ঞেস করছেন, 'ইয়া উমায়ের! মা ফালান নুগায়ের'
- ঠিক তেমনি বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে এতোটা বিশ্বস্ততা অর্জন করছেন যে, হিজরতের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা আবু বকর রাতের পর রাত দরজার পাশে নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছেন।
- মেরাজে খবর শুনে আবু বকর বলছেন, 'লাও ক্বলা মুহাম্মাদ আসমায়ু তাহতানা ওল আরদি ফাওকানা লা সদাকা মুহাম্মাদ'
- আলী রা. কে জীবন উৎসর্গের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'ইয়া রাসুলাল্লাহ! আলীর কাছে তো একটাই জীবন আছে, যদি ১০০ টা জীবন থাকতো সবগুলোই মুহাম্মদের নামে কুরবান করে দিতাম'
- স্ত্রীদের কাছে নবী আরাবী সা. ছিলেন একজন আদর্শ স্বামী। তিনি খুব সচেতনতার সাথে তার একাধিক স্ত্রীর সাথে ইনসাফপূর্ণ আচরণ করতেন।
- এজন্য সুরা নিসার ৩নং আয়াতে একাধিক বিয়ে পরামর্শ তাদেরকেই দেয়া হয়েছে যারা ইনসাফ করতে পারবে (ও ইন খিফতুম আল্লা তাদিলু ফওয়াহিদান)
- আয়েশা রা. ও সাফিয়া রা. মধ্যে মনমালিন্যের সমাধান করেছেন খুবই সুন্দরতম উপায়ে।
- রাতের বেলা স্ত্রীদের নিয়ে ঘুরতে বের হতেন আবার যুদ্ধাভিযানে টস করে একেক স্ত্রীকে নিয়ে যেতেন সফর সঙ্গী হিসেবে।
- খাদিজা রা. এর মৃত্যুর পর প্রচন্ড রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকেছেন তার কবরের পাশে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য।
- সমাজ পরিচালনায় রাসুলুল্লাহ সা. দূর করেছেন আউস-খাদরাজের মত সকল গোত্রীয় বৈষম্য (তোমার আগমনে মুক্তি পেল আউস...)
- এই ব্যাপারে তিনি বলেছেন, 'লা ফাজলা লি আরাবিয়িন আলা আজমি...'
- এতো আন্দোলনের পর আজও ইউরোপ আমেরিকাতে বর্ণবাদ দূর হয়নি।
- তাদের দেশে পাশাপাশি দুইটা টয়লেটে লেখা থাকে: 1.Only for White, 2.For Black and dog of white
- বিচার পরিচালনায় তিনি স্বজনপ্রীতিকে স্থান দেননি। তাইতো আরবের সম্রান্ত মহিলার চুরির ঘটনায় হাত কাটার নির্দেশ নিয়েছেন অকপটে।
- সাহাবীরা ঐ মহিলার শাস্তি কমানোর সুপারিশ করলে রাসুল বলেন, 'আমার মেয়ে ফাতিমা এই কাজ করলে তার জন্যও একই সিদ্ধান্ত হতো'
- আবার মুসলিম-ইহুদির ঝগড়া মিমাংসায় ইহুদির পক্ষে রায় দিয়েছেন। যেই ব্যাপারে কুরআনের সুরা নিসার ৬৫নং আয়াত নাযিল হয়েছে।
- রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ন শাসকের মডেল।
- মদিনা সনদের মাধ্যমে তিনি সকল দল, মত, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সহাবস্থান নিশ্চিত করেছেন। ভেঙে দিয়েছেন একদলীয় শাসনের ভিত্তি।
- হুদাইবিয়ার সন্ধির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী এলাকা বা রাষ্ট্রের সাথে নিজ স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে সু-সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
- যুদ্ধভিযানগুলোতে রণকৌশল ও গোয়েন্দা তথ্যের সহযোগিতা নিয়ে পৃথিবীর সুপার পাওয়ার পরাশক্তিগুলোর মোকাবেলা করে বিজয়ী হয়েছে।
- ৬৩ বছরের হায়াতে করেছেন ৮৩টি যুদ্ধ আর ২৩টি যুদ্ধে ছিলেন নিজেই সেনাপতি।
- এজন্য রাসুল বলেতন, 'আনা নাবীয়ুল মোলাহয়েম' (আমি যুদ্ধ করার নবী)
- মক্কা বিজয়ের পর ক্ষমার অনুপম দৃষ্টান্ত দেখিয়ে মানুষের দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
- এজন্য তার ব্যাপারে দার্শনিক বসওয়াত বলেছেন, Mohammad is wonder to me
- Historian Givon বলেছেন, He bring one of the most memorable revulsions which impressed a new and lasting character on the nations of th globe.
- বিদায় হজ্জের ভাষনে ঘোষনা করছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের রোডম্যাপ।
- তিনি বলেছেন, ধর্ম নিয়ে জোরাজুরি করবে না, মনিব-গোলামের তারতম্য করবে না, একজনের রক্ত অন্যজনের জন্য হারাম করছেন।
- জীবন সায়াহ্নে পরবর্তী নেতৃত্ব নিজে সিলেকশন না করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থানজারি রেখেছেন।
- পরবর্তী নেতৃত্ব একটা মডেল বাতলিয়ে দিয়েছেন, 'ও ইন তুআম্মিরু আবি বাকার তাজিদু আমিনা...'
- আজ বর্তমান পৃথিবীর সকল সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ মুহাম্মদ সা. এর কাছে রয়েছে। এই কথা অমুসলিম দার্শনিকরা স্বীকার করেছেন।
- এ ব্যাপারে দার্শনিক জর্জ বার্নারড'শ বলেন, 'If man like Mohammad were assum to the dictatorship of the modern world, He would secceed in solving all it's problems ib a way that would bring so much needed peace and happiness.'
- তাইতো ব্রিটিশ মিউজিয়াম এই কথার স্বীকারোক্তি হিসেবে প্রবেশপথে লিখে রেখেছে, 'As a father, as a teacher, as law giver, as law maker, as a reformer of the society Mohammad is the supper man in the world.'
0 Comments